১) এই মামলার কেন কোন চাক্ষুস সাক্ষী নাই। আর চাক্ষুস সাক্ষী ছাড়া বিচারকাজ কতটুকু গ্রহণযোগ্য ? কারণ কথিত আসামীদের তো ভয়ভীতি দেখিয়ে ও নির্যাতন করে সাক্ষ্য আদায় করা হতে পারে।
২) রাজীবের বান্ধবী তানজিলাকে কেন কোর্টে হাজির করা হলো না ? ‘তানজিলাই নারীঘটিত কারণে রাজীবকে হত্যা করেছে’ এমন আশঙ্কা কেন বিনা কারণে উড়িয়ে দেওয়া হলো ?
৩) রাজীব ব্লগে কি লিখতো ? তা কেন মামলার ফাইলে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি? কেন বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হলো ?
৪) মামলার আইও কেন এক বছর পর পরিবর্তন করা হলো ? আর অনলাইন ক্রিমিনাল মশিউর রহমান (সে আল্লামা শয়তান আইডি দিয়ে ধর্মবিদ্বেষী লেখার কারণে ২০১৩ সালে গ্রেফতার হয়) কিভাবে নিউজে বলে- তার চেষ্টায় আইও পরিবর্তন হয়েছে। (http://goo.gl/EqkdYg)
আমার মনে হয় উপরের প্রশ্নগুলো উত্তর খুজতে গেলে অবশ্যই প্রমাণ হবে-
রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডের বিচারের নামে দুটি নিরীহ ছাত্রকে মিথ্যা ফাঁসিতে ঝুলাতে যাওয়া হচ্ছে, তা অবশ্যই মানবতাবিরুদ্ধ। ( উপরের বিষয়গুলো সংগ্রহ করা হয়েছে বিভিন্ন নিউজ মিডিয়ায় বিচারকের বক্তব্য অনুসারে -- http://goo.gl/1vnqjV, http://goo.gl/0EZsNV, http://goo.gl/OkoxcZ)
আরেকটি বিষয়-
মামলায় রায়ে জসীম রহমানী নামক এক ব্যক্তিকে ৫ বছর জেলা দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সে বক্তব্যের মাধ্যমে রাজীবকে হত্যা করতে প্ররোচিত করেছে। অর্থাৎ হত্যাকারীকে হত্যাকাণ্ডে প্ররোচিত করাও একটি অপরাধ বলে গণ্য। এটা যদি সত্য হয়, তবে রাজীবের ব্লগগুলো পড়ে দেখুন তো (http://goo.gl/1HAjtk), এই ব্লগ পড়লে আরো কেউ হত্যাকাণ্ডে প্ররোচিত হয় কি না ? অর্থাৎ রাজীব কি নিজেই নিজেকে হত্যা করতে প্ররোচিত করেনি, যা অনেকটা আত্মহত্যার সামীল।
তবে এটা অস্বীকার করার উপর নেই, প্রশাসন ও বিটিআরসি’র (ঐ সময় চেয়্যারম্যান ছিলো সুনীল কান্তি বোস) উচিত ছিলো রাজীবকে ধর্ম নিয়ে এ ধরনের অশ্লীল ব্লগ লিখতে বারণ করা এবং তাকে শাস্তির আওয়াত আনা। কিন্তু প্রশাসন ও বিটিআরসি বিষয়টি করেনি।
হয়ত ভাবতে পারেন, এ ব্যাপারে প্রশাসন কিংবা বিটিআরসির উপর এনিয়ে হয়ত কোন নির্দেশনা ছিলো না। আসলে বিষয় ভুল।কারণ-
ক) রাজীবকে হত্যা করা হয় ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে। অথচ অনলাইনে এ ধরনের ধর্মবিরোধী অশ্লীল কন্টেন্ট ছড়ানো হচ্ছে তা সবাই জানতো এবং তা বন্ধ করতে ২০১২ সালের ২১ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি মির্জা হোসেন হায়দার ও খুরশিদ আলম সরকার প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেয় এবং একই সাথে দায়িদেরকে শাস্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। (http://goo.gl/sTZxSk)
খ) শুধু তাই নয়, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসেও হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ‘ধর্মকারী’ নামক একটি ওয়েবসাইট (যেখানে রাজীব ওরফে থাবার লেখা রয়েছে) এবং সমধর্মী ওয়েসসাইট বন্ধ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে পুনরায় নিদের্শ দেয়। এবং ৪ সপ্তাহের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়।( http://goo.gl/w2LDxu)
অথচ দেখুন এখনও ধর্মকারী ওয়েসসাইটে (http://www.dhormockery.net) আপনি ঢুকতে পারবেন। এবং সেখানে রাজীব হায়দারেরও (http://goo.gl/1HAjtk) লেখা পড়তে পারবেন। বলাবাহুল্য বিটিআরসি ও প্রশাসন যদি চায়, তবে- বাংলাদেশের আইপিতে ধর্মকারী ওয়েবসাইট বন্ধ করা মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যাপার। যারা এগুলো করছে তাদেরকে গ্রেফতার করাও মাত্র কয়েক ঘণ্টার দরকার (যেমন- প্রধানমন্ত্রী/এমপি/মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বললে সাথে সাথে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়)। কিন্তু সেটা করা হচ্ছে না। এমনকি হাইকোর্ট চাইলেও না, এমনকি এত খুন-খারাপি হওয়ার পরেও না।
বিষয়টি অনেকটি এরকম- আপনি একটি বাড়ির মধ্যে অনেক স্বর্ণ গয়না রেখে চোরকে বলছেন, চুরি করতে। আবার আড়াল থেকে ঐ চোরের জন্য বন্দুক তাক করে রেখেছেন, যেন চোর ঢুকলেই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
পুরো ঘটনাগুলো বিবেচনা করলেই এটাই দাড়ায়-
এই হত্যা মামলার পুরোটাই মিথ্যা এবং অযথাই দুটো নিরীহ ছাত্রকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর যদি ব্লগ লেখার কারণে হত্যাকাণ্ড হয়েই থাকে, তবে এর প্রচারণা সৃষ্টিকারী সকলেরই শাস্তি হওয়া উচিত। যেহেতু প্রশাসন ও বিটিআরসি’র এখন পর্যন্ত গাফেলতি স্পষ্ট, তাই মামলার এ ধরনের চূড়ান্ত রায় কখনই গ্রহনযোগ্য হতে পারে না।
তাই - হাইকোর্টে মামলাটি পুনরায় আপীল করা হোক, সবগুলো বিষয় বিবেচনা করে নিরীহ ছাত্রদেরকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক।
(যারা বিষয়টিতে একমত, তাদের প্রতি লেখাটি পাওয়া মাত্র নিজ আইডিতে কপি করে লেখাটি ছড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ রইলো।)
Comments
Post a Comment