আরবলের বাদশা মালিক মুজাফর জয়নুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রতি আরোপিত ওহাবীদের মিথ্য অপবাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব





কাট্টা ওহাবী ভ্রান্ত ও মিথ্যুক ফির্কা হচ্ছে এই দেওবন্দী ফির্কা। হাটহাজারীর দেওবন্দী জুনায়েদ বাবু নগরী পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা করতে গিয়ে তাদের পত্রিকার আর্টিকেলে লাইনে লাইনে মিথ্যাচার করেছে।
সে তৎকালীন বিখ্যাত বাদশা হযরত মুজাফফরুদ্দীন ইবনে যাইনুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার নামে একের পর এক মিথ্য অপবাদ দিয়ে গিয়েছে। সে তার আর্টিকেলে লিখেছে–

//“সে ছিল এক অপব্যয়ী বাদশা। সে নিজস্ব ইজতিহাদ ও অভিরুচি মতে আমল করার জন্য সমকালীন আলেমদের আদেশ দিত এবং অন্য ইমামের অনুসরণ না করার জন্য উৎসাহ যোগাত। ফলে (স্বার্থপর) আলেমদের একটি দলকে সে বাগিয়ে নিয়েছিল। সে প্রতি রবীউল আউয়াল মাসে মীলাদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করত। সেই প্রথম বাদশা যে এই নবতর প্রথার
ভিত্তি স্থাপন করে।” (আল কাউলুল মু’তামাদ ফী আমালিল মাওলীদ, মিন্হাযুল ওয়াযিহ্-২৪৯)।
এই অপব্যয়ী বাদশা প্রজাদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য ধর্মের নামে বাইতুল মালের লক্ষ লক্ষ টাকা মীলাদুন্নবীর আয়োজনে পানির মত ব্যয় করত। প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক আল্লামা যাহাবী (রাহ্.) তার সম্পর্কে লিখেন, “সে প্রতি বছর মীলাদুন্নবী উপলক্ষে প্রায় তিন লক্ষ দিনার ব্যয় করত।” (দুয়ালুল ইসলাম-২/১৩৬)।
আল্লামা ইব্নে কাসীর ও আল্লামা ইব্নে খাল্লিক্বান (রাহ্.) লিখেন, “কোন কোন মীলাদ মাহ্ফিলে সেই বাদশার দরখানে পাঁচ হাজার ভূনা মাথা, দশ হাজার মুরগী এবং ত্রিশ হাজার হালুয়ার পাত্র থাকত। মাহ্ফিল স্থানে স্থাপন করা হত বিশটিরও অধিক চার পাঁচ তলা বিশিষ্ট গম্বুজ। তন্মধ্যে একটি গম্বুজ বাদশার জন্য নির্দিষ্ট থাকত। অবশিষ্ট গম্বুজগুলোতে অবস্থান করত বাদশার উজির-নাজির ও সভাসদবর্গ। সফর মাস থেকেই শুরু হত গম্বুজ সাজানোর কাজ। এ মাহ্ফিলে অত্যন্ত ধুমধামের সাথে নাচ-গানের আসর বসত। বাদশা নিজেও নাচে অংশগ্রহণ করত। মাহ্ফিল শেষে যোগদানকারীদের যথাযোগ্য সম্মানীও দেওয়া হত।” (তারীখে ইব্নে কাসীর-১৩/১৩৭,তারীখে ইব্নে খাল্লিক্বান-৪/১১৭-১১৯)।
সুপ্রসিদ্ধ ‘দুয়ালুল ইসলাম’ ইতিহাস গ্রন্থে দেখা যায়,উপরোক্ত অপব্যয়ী বাদশার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে মীলাদ মাহ্ফিলের
বৈধতা ব্যাখ্যা করে আবুল খাত্তাব উমর ইব্নে দিহ্য়া (মৃতঃ ৬৩৩ হিজরী) ‘আত-তানবীর ফী মাওলিদিস্ সিরাজিল মুনীর’ নামক একটি কিতাব রচনা করেছিল। এজন্য সে বাদশার পক্ষ থেকে এক হাজার দিনার বখশিশ লাভ করেছিল। (খন্ড-২,পৃষ্ঠা-১৩)। এই মৌলবী সম্পর্কে আল্লামা হাফেজ ইব্নে হাজার আসক্বালানী (রাহ্.) লিখেন, “সে পর্ববর্তী ইমাম ও আলেম-উলামাদের সাথে বেআদবী করত। সে ছিল অশ্লীল ভাষী, অহঙ্কারী, নির্বোধ এবং দ্বীন সম্পর্কে সংকীর্ণমনা ও অলস প্রকৃতির।” (লিসানুল মীযান-৪/২৯৬, আল্ মিন্হাযুল ওয়াযিহ্)। তিনি আরও লিখেন, “আল্লামা ইব্নুন্নাজ্জার মন্তব্য করেন যে, আমি এই মৌলবীর মিথ্যাচার ও দুর্বলতা সম্পর্কে লোকদের একমত দেখেছি।” (লিসানুল মীযান-৪/২৯৬, আল্ মিনহাযুল ওয়াযিহ্)।////

এবার আসুন প্রকৃত সত্য সম্পর্কে জানা যাক :

অথচ প্রকৃতপক্ষে এই বিখ্যাত আল্লাহওয়ালা বাদশা সম্পর্কে সকল ইমাম মুস্তাহিদগন কি বলেছেন দেখুন–

বিখ্যাত মুহাদ্দিস,হাফিজে হাদীস আল্লামা ইবনে কাছীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-

ﻛﺎﻥ ﻳﺼﺮﻑ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻤﻮﻟﺪ ﻛﻞ ﺳﻨﺔ ﻋﻠﻲ ﺛﻼﺛﺔ ﺍﻟﻒ ﺩﻳﻨﺎﺭ

অর্থ: আরবলের বাদশা হযরত মালিক মুজাফফরুদ্দীন ইবনে যাইনুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রতি বছর পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে তিন লক্ষ দিনার ব্যায় করতেন।” সুবহানাল্লাহ্ !

দলীল-
√ আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১৩ তম খন্ড ১৩৭ পৃষ্ঠা ।

উক্ত ঘটনা থেকে বুঝা যায় তিনি অনেক বড় আশেকে রসূল ছিলেন। এবং অবশ্যই আল্লাহ পাক উনার অত্যন্ত মাহবুব ওলী আল্লাহ ছিলেন। আর সে কারনে সকল বিখ্যাত ও অনুসরনীয় ও সর্বজনমান্য ইমাম মুস্তাহিদগন উনারা সবাই এক বাক্যে উক্ত বাদশার ভূয়সী প্রসংসা করেছে।

এপ্রসঙ্গে হাফিজে হাদীস ইমাম যাহাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে লিখেন–

ﻛﺎﻥ ﻣﺘﻮﺍﺿﻌﺎ ﺧﻴﺮﺍ ﺳﻨﻴﺎ ﻳﺤﺐ ﺍﻟﻔﻘﻬﺎﺀ ﻭﺍﻟﻤﺤﺪﺛﻴﻦ

অর্থ: বাদশা হযরত মালিক মুজাফফরুদ্দীন ইবনে যাইনুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি নম্র,ভদ্র,ব,ও উত্তম স্বভাবের অধিকারী ছিলেন। তিনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি ফক্বীহ ও মুহাদ্দিস গনকে অত্যন্ত ভালবাসতেন।”

দলীল-
√ সিয়ারু আলামীন নবালা ২২ তম খন্ড ৩৩৬ পৃষ্ঠা

এ মহান বাদশার প্রসংসায় উনার সমকালীন বিখ্যাত ইতিহাসবিদ আল্লামা ক্বাযী ইবনে খল্লিক্বান রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার
কিতাবে লিখেন–

ﻭﻛﺮﻡ ﺍﻻﺧﻼﻕ ﻛﺜﻴﺮ ﺍﻟﺘﻮﺍﺿﻊ ﺣﺴﻦ ﺍﻟﻌﻘﻴﺪﺓ ﺳﺎﻟﻢ ﺍﻟﻄﺎﻗﺔ ﺷﺪﻳﺪ ﺍﻟﻤﻴﻞ ﺍﻟﻲ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﻭ ﺍﻟﺠﻤﺎﻋﺔ ﻻ ﻳﻨﻔﻖ ﻋﻨﺪ ﻣﻦ ﺍﺭﺑﺎﺏ ﺍﻟﻌﻠﻮﻡ ﺳﻮﻱ ﺍﻟﻔﻘﻬﺎﺀ ﻭﺍﻟﻤﺤﺪﺛﻴﻦ ﻭﻣﻦ ﻋﺪﺍﻫﻤﺎ ﻻ ﻳﻌﻄﻴﻪ ﺷﻴﺎ ﺍﻻ ﺗﻜﻠﻔﺎ

অর্থ: বাদশা হযরত মুজাফফরুদ্দিন ইবনে যাইনুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রসংসনীয়, চরিত্রের অধিকারী,অত্যধিক
বিনয়ী ছিলেন। উনার আক্বীদা ও বিশ্বাস ছিল সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ। তিনি আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের একনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন। তিনি আলিম উলামা, ফক্বীহ ও মুহাদ্দিসগন উনাদোর পিছনে ব্যয় করা ব্যতীত সকল ক্ষেত্রে ব্যয় করার ব্যাপারে মিতব্যয়ী ছিলেন। ”

দলীল-
√ ওয়াফইয়াতুল আ’ইয়ান ৪র্থ খন্ড ১১৯ পৃষ্ঠা

বিখ্যাত ইতিহাসবেত্তা হাফেয ইবনে কাছীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে লিখেন-

ﺍﻟﻤﻠﻚ ﺍﻟﻤﻈﻔﺮ ﺍﺑﻮ ﺳﻌﻴﺪ ﻛﻮﻛﺒﺮﻱ ﺍﺣﺪ ﻟﻼﺟﻮﺍﺩ ﺍﻟﺴﺎﺩﺍﺕ ﺍﻟﻜﺒﺮﺍﺀ ﻭﺍﻟﻤﻠﻮﻙ ﺍﻻﻣﺠﺎﺩﻟﺔ ﺍﺛﺮ ﺣﺴﻨﺔ

অর্থ: বাদশা হযরত মুজাফফরুদ্দীন ইবনে যাইনুদ্দীন আবু সাঈদ কাওকাবারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি দানশীল ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের অন্যতম ছিলেন। সাথে সাথে তিনি সম্মানিত বাদশাও ছিলেন। উনার বহু পূন্যময় কাজের আলামত এখনও বিদ্যমান রয়েছে ।”

দলীল-
√ আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১৩ তম খন্ড ১৩৬ পৃষ্ঠা ।

এ মহান বাদশা বিশুদ্ধ আক্বীদা এবং উত্তম আমলের অধিকারী ছিলেন বলেই সে জামানার সকল আলিম উলামা, মাশায়েখ,
ছুফী দরবেশ সবাই সে সময় উনার আয়োজিত মীলাদ শরীফ মাহফিলে উপস্থিত হতেন। এ প্রসঙ্গে বর্নিত আছে-

ﻭﺍﻣﺎ ﺍﺣﺘﻔﺎﻝ ﺑﻤﻮﻟﺪ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻓﺎﻥ ﺍﻟﻮﺻﻒ ﻳﻘﺼﺮ ﻋﻦ ﺍﻻﺣﺎﻃﺔ ﺑﻬﺎ ﻭﻟﻜﻦ ﻧﺬﻛﺮ ﻃﺮﻗﺎ ﻣﻨﻪ ﻭﻫﻮ
ﺍﻫﻞ ﺍﻟﺒﻼﺩ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻗﺪ ﺳﻤﻌﻮﺍ ﺑﺤﺴﻦ ﺍﻋﺘﻘﺎﺩ ﻓﻴﻪ ﻓﻜﺎﻥ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺳﻨﺔ ﻳﺼﻞ ﺍﻟﻴﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺒﻼﺩ ﺍﻟﻌﺮﺑﻴﺔ ﻣﻦ ﺍﺭﺑﻞ ﻣﺜﻞ ﺑﻐﺪﺍﺩ ﻭﺍﻟﻤﻮﺻﻞ ﻭﺍﻟﺠﺰﻳﺮﺓ ﻭ ﺳﻨﺠﺎﺭ ﻭﻧﺼﺒﻴﻦ ﻭﺑﻼﺩﺍ ﺍﻟﻌﺠﻢ ﻭﺗﻠﻚ ﺍﻟﻨﻮﺍﺣﻲ ﺣﻠﻖ ﻛﺜﻴﺮ ﻣﻦ ﺍﻟﻔﻘﻬﺎﺀ ﻭﺍﻟﺼﻮﻓﻴﺔ ﻭﺍﻟﻮﻋﺎﺀﻅ ﻭﺍﻟﻘﺮﺍﺀ ﻭﺍﻟﺸﻌﺮﺍﺀ

অর্থ: বাদশা হযরত মুজাফফরুদ্দীন ইবনে যাইনুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি কতৃক আয়োজিত মীলাদ শরীফ এর মাহফিলের গুরুত্ব-মাহাত্ব বলে শেষ করার মত নয়। এতদসত্বেও একটি কথা না বললেই নয়। তাহলো দেশবাসী আক্বীদা ও বিশ্বাসে উনাকে উত্তম লোক বলেই জানতেন। আর তাই প্রতি বছর আরবলের নিকটবর্তী সকল দেশে যেমন বাগদাদ,মাওয়াছিল,জাযীরাহ,সানজার,নাছীবাইন,আরব-অনারব ও আশ পাশের অসংখ্য আলীম উলামা, ফক্বীহ, ছালিহ,ওয়ায়িজ, ক্বারী ও শায়িরগন উক্ত মীলাদ শরীফ এর মাহফিলে উপস্থিত হতেন।”

দলীল-
√ ওয়াফইয়াতুল আ’ইয়ান ৪র্থ খন্ড ১১৭ পৃষ্ঠা

হাফিজুল হুফফায, ইমামুল মুহাদ্দিসীন, আল্লামা, ইমাম হযরত জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি “আল হাবীলিল ফতওয়া” নামক কিতাবে বর্ণনা করেন, “সর্বপ্রথম যিনি এই প্রকার মীলাদ মাহফিলের প্রবর্তন করেন, তিনি হলেন আরবালের বাদশাহ্ মালিক মুজাফফর আবূ সাইদ বিন জয়নুদ্দীন।” ইমাম সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উক্ত বাদশাহ্ সম্বন্ধে উনার “হুসনুল মাকাসিদ ফি আমালিল মাওয়ালিদ” কিতাবে সুপ্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক ও মুহাদ্দিছ আল্লামা ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন যে,—

ﻭﻛﺎﻥ ﺷﻬﻤﺎ ﺷﺠﺎﻋﺎ ﺑﻄﻼ ﻋﺎﻟﻤﺎ ﻋﺎﺩﻻ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺍﻛﺮﻡ ﻣﺜﻮﺍﻩ

অর্থ: “তিনি তীক্ষ্ম বুদ্ধি-সম্পন্ন, সাহসী, বীর্যবান, আলিম ও ন্যায় বিচারক ছিলেন। আল্লাহ্ পাক উনার প্রতি রহম করুন উনাকে সম্মানিত বাসস্থান দান করুন।” শায়খ হাফিয আবুল খত্তাব ইবনে দাহইয়া বাদশাহর এই মীলাদ অনুষ্ঠান সম্পর্কে এক বৃহৎ কিতাব প্রণয়ন করে তার নাম দিয়েছেন, “আততানবীরু ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযীর।” ঐতিহাসিক ইবনে খাল্লেকান হাফিয আবুল খত্তাব ইবনে দাহইয়ার পরিচয় দিতে গিয়ে “তারীফে ইবনে খাল্লেকানে” লিখেছেন, “তিনি তৎকালীন বিখ্যাত ও নেতৃস্থানীয় আলিম বিদ্বানগণের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তিনি পশ্চিমের কোন এক দেশ হতে আগমন করে শাম ও
ইরাক সফর করেন এবং হিজরী ৬০৪ সালে ‘আরবল’ শহরে আগমন করে সেখানেই অবস্থান করেন। তখনকার বাদশাহ্ মালিক মুজাফফরকে মীলাদুন্নবীর প্রতি যথেষ্ট আগ্রহান্বিত ও যত্নপরায়ণ দেখে উনার এই কর্মের সমর্থনে ﺍﻟﺘﻨﻮﻳﺮ নামক একটি কিতাব  প্রণয়ন করেন।” প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আল্লামা ইবনু জাওজী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নাতি ‘মিরআতুজ্জামান’ নামক পুস্তকে বলেন, “তাঁর (বাদশাহর) আয়োজিত মীলাদ মাহফিলে শীর্ষস্থানীয় ছূফী ও আলিমগণ উপস্থিত হতেন।”




অনুরূপ বিবরণ বিখ্যাত গ্রন্থ “সীরাতে শামী, সীরাতে হালবীয়া, সীরাতে নববীয়া ও যুরকানী” ইত্যাদিতেও বিদ্যমান আছে ।

পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন উপলক্ষে টাকা পয়সা খরচ করার কারনে এই নবীর দুশমন ওহাবী দেওবন্দী গ্রুপ উক্ত সম্মানিত বাদশার বিরোধিতা করে। এই ছদকা খেয়ে জীবকা নির্বাহী হাটহাজারী খারেজী দের কাছে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টির জন্য খরচ করাটা অপচয়। নাউযুবিল্লাহ ।

অথচ দেখিন বিশিষ্ট তাবিয়ী, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত,যিনি শতাধিক সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের সাক্ষাত মুবারক লাভ করেছিলেন, সেই বিখ্যাত ইমাম হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ﻗﺎﻝ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﺍﻟﺒﺼﺮﻯ ﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭَﺩِﺩْﺕُّ ﻟَﻮْ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﻰْ ﻣِﺜْﻞُ ﺟَﺒَﻞِ ﺍُﺣُﺪٍ ﺫَﻫْﺒًﺎ ﻓَﺎَﻧْﻔَﻘْﺘُﻪٗ ﻋَﻠٰﻰ ﻗِﺮَﺍﺀَﺓِ ﻣَﻮْﻟِﺪِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰِّ ﺻَﻠّٰﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ .

অর্থ: ‘আমার একান্ত ইচ্ছা হয় যে, আমার যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ থাকতো তাহলে তা পবিত্র মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ব্যয় করতাম।’ সুবহানাল্লাহ!

দলীল-
√ আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ৮ পৃষ্ঠা !!

এ পোস্ট থেকে প্রমানিত হলো জুনায়েদ বাবু নগরী সহ সকল ওহাবী যারা বাদশা মুজাফফর উদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি  বিরোধিতা করে তার একটা মিথ্যবাদী মুনাফিক।

Comments

নতুন পোস্ট সমূহ

বিদআতের পরিচয়, বিদআত কাকে বলে কত প্রকার ও কী কী বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফের ৫৭-৫৮ নম্বর আয়াত শরীফের সঠিক ব্যাখ্যা

তাবলীগের অর্থ ও তাবলীগের প্রকার।

আরবীতে ‘কুল্লু/কুল্লুন’ শব্দের অর্থ হচ্ছে প্রত্যেক।কিন্তু সবসময় এ শব্দটি দ্বারা ‘প্রত্যেক/সকল’ অর্থ বুঝায় না।

তাবলীগ করা কি সবার জন্য ফরজ?

কিশোরী আয়েশা সিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার বিয়ে নিয়ে বিদ্বেষীদের মিথ্যাচার!!

কুরআন ও হাদিসের আলোকে মিলাদুন্নবী

যারা বলে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফের দিন খুশী প্রকাশ করা যাবে না, তাদের বক্তব্যের দাঁতভাঙ্গা জবাব

~~~~~~~~~~~ শরীয়তে ঈদ কয়টি ? ~~~~~~~~~~~

ইসলামে জন্মদিন পালন করা কি প্যাগানদের থেকে এসেছে? ইহুদী, খ্রিস্টানদের কালচার? ইসলামী শরীয়ত জন্মদিন পালন সম্পর্কে কি বলে ?